মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে ওঠাদের সংখ্যা বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ১৭ হাজার ৩৯২ জন এবং মারা গেছেন ৬ হাজার ৮৩৯ জন।
আগের দিন রোববার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪ লাখ ৪১ হাজার ২৮৯ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৭০০ জন।
অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ২৩ হাজার ৮৯৭ জন এবং মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ১৩৯ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের চার্ট অনুযায়ী, রোববারের মতো সোমবারও করোনায় দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে শীর্ষে ছিল যুক্তরাজ্য এবং এ রোগে এ দিন সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ায়।
সোমবার যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫০ জন এবং এ রোগে দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। অন্যদিকে, করোনার বর্তমান এশীয় কেন্দ্র (এপিসেন্টার) হিসেবে পরিচিত পাওয়া দেশ ইন্দোনেশিয়ায় সোমবার করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৪ হাজার ২৫৭ জন এবং এই দিন করোনায় দেশটিতে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৩৮ জন।
২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থনে যৌথভাবে আছে ভারত ও রাশিয়া। যুক্তরাজ্য-ইন্দোনেশিয়ার মতো চিত্র দেখা গেছে এ দু’দেশের ক্ষেত্রেও; অর্থাৎ, আক্রান্তের হিসেবে এগিয়ে আছে ভারত, মৃত্যুর হিসেবে রাশিয়া।
ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ভারতে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ৪২৪ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৭২ জন।
অন্যদিকে, রাশিয়ায় সোমবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৬৩৪ জন এবং এ রোগে এ দিন দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৭১৯ জনের।
এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে ইরান। সোমবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪৪১ জন এবং মারা গেছেন ২১৩ জন।
ইরানের পরই যে দেশটি এ তালিকায় রয়েছে- তার নাম যুক্তরাষ্ট্র। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে এখন পর্যন্ত শীর্ষে থাকা এই দেশটিতে সোমবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৪০১ জন এবং মারা গেছেন ১২১ জন।
এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের আরও যেসব দেশে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেশি ছিল – সে দেশসমূহ হলো – স্পেন (আক্রান্ত ২০ হাজার ৫৪২, মৃত্যু ৭), ব্রাজিল (আক্রান্ত ১৫ হাজার ২৭১, মৃত্যু ৬১৫), কলম্বিয়া (আক্রান্ত ১৬ হাজার ৪৫৪, মৃত্যু ৪৪৬) ও আর্জেন্টিনা (আক্রান্ত ১২ হাজার ৪৬৪, মৃত্যু ৪০৬)।
সোমবারের পর বিশ্বে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে মোট ১ কোটি ৩০ লাখ ৩১ হাজার ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে এই রোগের মৃদু উপসর্গ বহন করছেন ১ কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার ২২৪ জন এবং গুরুতর অবস্থায় আছেন ৮০ হাজার ৯৩৯ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৭৩০ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫৫৫ জনের।
তবে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। সোমবার বিশ্বজুড়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩২ জন এবং মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার ২১ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। পরে সাধারণভাবে এই ভাইরাসটি পরিচিতি পায় নতুন বা নভেল করোনাভাইরাস নামে। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছে উহানেই। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তখন জানানো হয়েছিল, ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।
এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা যাওয়ায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে ওই বছর ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।