তেলের বেচাকেনা চলে ভবিষ্যৎ মূল্যের ওপর নির্ভর করে। আগামী মে মাসের ভবিষ্যৎ চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল)। ফলে ব্যবসায়ীরা নিজেদের হাতে থাকা তেলের মজুত ছেড়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দরপতন হয়েছে ৯০ শতাংশ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, ফিউচার মার্কেটে আগামী মে মাসের জন্য করা চুক্তিতে তেলের দাম দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ০ ডলারেরও নিচে।
সোমবার ফিউচার মার্কেটে মে মাসে সরবরাহের জন্য ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল মাইনাস ৩৭ দশমিক ৬৩ ডলার। অর্থাৎ, ওই সময়ে ক্রেতাকে প্রতি ব্যারেল তেলের সঙ্গে এই পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি ছিল উৎপাদকরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সৌদি আরব থেকে তেল আমদানি আপাতত বন্ধ রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
উৎপাদকরা উল্টো ক্রেতাদের দাম পরিশোধের কারণ হচ্ছে, আগামী মে মাসের মধ্যেই তাদের মজুত ক্ষমতা পূর্ণ হয়ে যাবে। তখন অতিরিক্ত সরবরাহ মজুত করতে তারা ট্যাংকার ভাড়া করতে বাধ্য হবে। অর্থাৎ, উৎপাদকরা তেলের দাম মাত্রাতিরিক্ত কমিয়ে সংরক্ষণাগারের খরচ কমানোর চেষ্টা করেছেন। মূলত এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে দাম ঋণাত্মক পর্যায়ে বা ০ ডলারের নিচে পৌঁছেছে।
একদিকে আগের তুলনায় মানুষ ভ্রমণ সীমিত করায় তেলের চাহিদা কমে গেছে। অন্যদিকে তেলের মজুতকেন্দ্রগুলো পরিপূর্ণ হয়ে আছে। এ দুইয়ের ফলে বাজারে এমন ভয়াবহ চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে।
“ন্যাশনাল এভারেজ গ্যাস প্রাইজেস”-এর তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন রাজ্যজুড়ে দেখা গেছে যানবাহনের সাধারণ গ্যাসের দাম গ্যালনপ্রতি গড়ে ১ দশমিক ৮১ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে পতনের মাত্রা বেশি হলেও কমবেশি বিশ্বজুড়েই চলছে তেলের দরপতন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত সপ্তাহে আলোচনা শুরু হয় তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে। গত ১৩ এপ্রিল নানা আলোচনা ও জল্পনার পর ওপেক প্লাস ও তেল উৎপাদক মিত্র দেশগুলো উৎপাদন কমানোর ঐতিহাসিক সমঝোতায় পৌঁছায়। দৈনিক ৯৭ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ব্যাপারে একমত হয় শীর্ষ তেল উৎপাদক ও রফতানিকারকদের এই জোট। সূত্র: সিএনএন, বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা।