আবার দেশের অভ্যন্তরে করোনা ঠেকাতে কারখানা বন্ধ রাখতে হয় প্রায় এক মাস। এ পরিস্থিতি কাটিয়ে গত ২৬ এপ্রিল থেকে কারখানা সচল হতে শুরু করেছে। কারখানা মালিকরা বলছেন, বাতিল বা স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশগুলোর কিছু ফিরে এসেছে। আবার নতুন ক্রয়াদেশও পেতে শুরু করেছে কারখানাগুলো। কিন্তু তা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম।
ক্রয়াদেশ আগের তুলনায় কেমন, এমন প্রশ্নের উত্তরে ইউরোপভিত্তিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির কান্ট্রি ম্যানেজার বলেন, ভোক্তা আচরণে আমরা বড় ধরনের পরিবর্তন দেখছি। মানুষের অগ্রাধিকার বদলেছে। আমরা স্টোরগুলোতেও কম ভিড় দেখছি। অনলাইন বড় সফলতার ক্ষেত্র হলেও এক্ষেত্রে অনেক কাজ প্রক্রিয়াধীন। এদিকে লকডাউনে স্টোর বন্ধ থাকায় মজুদ পণ্য নিয়েও আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। এ মুহূর্তে আমরা পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত, অনেক কাজ প্রক্রিয়াধীন।
ক্রয়াদেশ পরিস্থিতি নিয়ে পোশাক শিল্প মালিকের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, আজ পর্যন্ত পোশাকের বৈশ্বিক বিক্রির পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে পুনরুদ্ধারের কোনো ইঙ্গিত নেই। বিশ্বব্যাপী দেশগুলো অবরুদ্ধ বা লকডাউন পরিস্থিতি থেকে পুনরায় সচল হওয়া নিয়ে লড়াই করছে। কারণ কভিডের উল্লেখযোগ্য ঢেউ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে দমিয়ে রাখছে। এটা আমাদের জন্য খারাপ সতর্কবার্তা, কারণ পোশাক শিল্প পশ্চিমা বাজারের চাহিদার ওপর নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রগুলোর বিক্রি গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে ৮৭ শতাংশ কমেছে। মে মাসে কমেছে ৬৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ—এমন তথ্য
জানিয়ে বিজিএমইএ প্রতিনিধিরা বলছেন, এ বছরের মার্চ থেকে আমাদের পোশাক রফতানিরও অবাধ পতন ঘটছে। মার্চে রফতানি কমেছে ২০ শতাংশ, এপ্রিলে ৮৫ শতাংশ, মে মাসে ৬৩ শতাংশ। জুনে অবস্থা তুলনামূলক ভালো হবে, কারণ আমরা আশা করছি পতনের হার কমে আসবে।
বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, আমাদের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে কারখানাগুলোর গড় সক্ষমতার ৫৫ শতাংশের মতো ক্রয়াদেশ আছে, যা বছর শেষে বাড়তে পারে। ২০২০-এর ডিসেম্বরের মধ্যে সক্ষমতার ৭০ শতাংশ ক্রয়াদেশ হতে পারে। এ ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবসম্মত নাও হতে পারে। তার পরও আমরা ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে নিয়মিত রফতানির ৮০ শতাংশ হবে, এ আশা করতে পারি।