সূত্র বলছে, মোট ১৮৯টি কারখানার ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন (ইউডি) সেবা স্থগিতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জাতীয় উদ্যোগের আওতায় ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৫৪৯টি কারখানায় প্রাথমিক মূল্যায়ন করা হয়। এর আওতায় কারখানাগুলোয় স্থাপত্য, অগ্নি, বৈদ্যুতিক বিষয়ক সুনির্দিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অনেক কারখানা এখন পর্যন্ত কোনো সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করেনি এবং অধিদপ্তরে সংস্কারকাজ সম্পাদনের জন্য ড্রইং-ডিজাইন জমা দেয়নি।
জাতীয় উদ্যোগের আওতায় থাকা কারখানাগুলোর সংস্কার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য গত বছর সেপ্টেম্বরে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে ১৫তম জাতীয় ত্রিপক্ষীয় কমিটির (এনটিসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে এসকেলেশন প্রটোকল অনুমোদন করা হয়। ওই প্রটোকল অনুসরণের চতুর্থ ধাপে যে কারখানা সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে না, তাদের ইউডি সেবা সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রদান স্থগিত রাখার বিষয় বলা হয়।
এনটিসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সম্প্রতি পোশাক খাতসংশ্লিষ্ট দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে তাদের সদস্য মোট ১৮৯টি কারখানায় তিন মাসের জন্য ইউডি সেবা স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর মধ্যে বিজিএমইএকে তাদের ১৪৩টি কারখানার সেবা স্থগিতের চিঠি দেয়া হয়েছে গত ৫ ডিসেম্বর। বিকেএমইএকে তাদের সদস্য ৪৬টি কারখানার সেবা বন্ধ করার চিঠি দেয়া হয়েছে গত ২৯ ডিসেম্বর।
জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ২০১৯ সালে ইউডি পরিস্থিতি বলছে ১৪৩টির মধ্যে ৫৪টি কারখানা ইউডি নিয়েছে। আমরা এ কারখানাগুলোর স্থাপত্য-বৈদ্যুতিক-অগ্নি বিষয়ক সাবমিশন পরীক্ষা করছি। এর আগে আমরা ৫১টি কারখানার ইউডি স্থগিত করেছিলাম।
জানা গেছে, গত বছর জুনেও সংস্কার কার্যক্রমের গড়িমসি ও অনগ্রসরতায় ইউডি সেবা স্থগিতের তত্পরতা ছিল। ওই সময় বিজিএমইএর ৫১টি ও বিকেএমইএর ৭৩টি কারখানার বিরুদ্ধে সেবা স্থগিতের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়।
উল্লেখ্য, তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলোকে রফতানি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর কাছ থেকে কাঁচামাল ব্যবহারের উপযোগিতা সনদ নিতে হয়, যা ইউডি সেবা হিসেবে পরিচিত। আর ইউডি সনদ না থাকলে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় না কোনো কারখানা।
রানা প্লাজা ধসের পর জাতীয় ত্রিপক্ষীয় কর্মপরিকল্পনার (এনটিপিএ) আওতায় অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও জাতীয় উদ্যোগে শুরু হয় পোশাক কারখানা মূল্যায়ন কার্যক্রম। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক দুই জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের আওতাধীন কারখানাগুলোর ৮৫ শতাংশের ত্রুটি সংস্কার হলেও জাতীয় উদ্যোগের আওতায় শতভাগ সংস্কার সম্পন্ন করেছে ১ শতাংশেরও কম কারখানার। এর মধ্যে একাধিক সতর্কতা জারির পরও সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি নেই এমন কারখানার বিরুদ্ধে প্রাথমিক ব্যবস্থা হিসেবে ইউডি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
যে কারখানা সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেনি বা যাদের অগ্রগতি ২০ শতাংশের নিচে, তাদেরকে এসকেলেশন প্রটোকলের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করে সংস্কার কার্যক্রম তদারকি করেছে ডিআইএফই। এক্ষেত্রে যেসব কারখানার সংস্কারকাজ একেবারেই নগণ্য, সেগুলোর ইউডি ইস্যু না করার জন্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে বলা হয় গত বছর।
জেড এইচ/ বনিক বার্তা/ ডেস্ক