জানা যায়, বাজারে দেশী ও ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদাই বেশি। স্বাদ ও আকারের ভিন্নতা থাকায় ক্রেতারা বিকল্প উৎস থেকে আসা পেঁয়াজ কিনতে ততটা আগ্রহী নন। ফলে বাড়তি চাহিদার পাশাপাশি ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে শুল্ক আরোপ করায় দাম বাড়ছে পণ্যটির।
ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৬০-৬২ টাকা দরে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিলি ৬৭-৬৮ টাকায়। সম্প্রতি পেঁয়াজ রফতানিতে ভারত শুল্ক আরোপ করায় ব্যয় বেড়ে গেছে ব্যবসায়ীদের। যদিও চীন ও পাকিস্তান থেকে আসা পেঁয়াজ তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশের বাজারে এসব পেঁয়াজের চাহিদাও বেশ কম।
পাইকার ও আড়তদাররা জানিয়েছেন, দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও ক্রেতারা দেশীয় ও ভারতীয় পেঁয়াজই বেশি কিনছেন। অন্যদিকে, আকারে বড় ও ভেজা হওয়ায় চাহিদা এবং দাম দুটোই কম চীনা ও পাকিস্তানি পেঁয়াজের। সর্বশেষ গত শুক্র ও শনিবার পাইকারি পর্যায়ে এসব পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিতে ৪৮-৫৫ টাকায়।
এদিকে চাহিদা বেশি থাকায় অব্যাহত বাড়ছে দেশী ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম। বাজারে বিকল্প উৎসের পেঁয়াজের যথেষ্ট সরবরাহ থাকলেও ক্রেতা আগ্রহ কম থাকায় লোকসানের পথে ব্যবসায়ীরা। এ পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
খাতুনগঞ্জে চলতি সপ্তাহে কেজিপ্রতি দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৮ টাকায়, ভারতীয় ৬৫-৬৮ টাকায়, পাকিস্তানি ৪৫-৫০ টাকায় এবং চীন থেকে আমদানি হওয়া পণ্যটি বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৪৮-৫৫ টাকায়। তবে খাতুনগঞ্জে দেশীয় পেঁয়াজের বিক্রি কম থাকায় ভারতীয়, চীনা ও পাকিস্তানি পেঁয়াজের সরবরাহ বেশি। শনিবার সমুদ্রপথে আমদানি হওয়া পেঁয়াজের বস্তায় পচন ধরায় বাজারদরের চেয়েও কমে পণ্য ছাড়তে দেখা গেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পচনশীল পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ ভারত সবচেয়ে ভালো উৎস। বাংলাদেশের চারপাশেই ভারতের সীমানা থাকায় একদিনের ব্যবধানেই পণ্য দেশের পাইকারি বাজারগুলোয় প্রবেশ করতে পারে। ফলে আমদানি পথে নষ্ট হয়ে যাওয়ার হার কম।
মিসর, পাকিস্তান, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে এলেও দীর্ঘযাত্রার কারণে একটি উল্লেখযোগ্য অংশই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কম দামে আমদানি হলেও দেশে আসার পর দাম বেড়ে যায়। অনেক সময় জাহাজীকরণে বিলম্বের কারণেও লাভের মার্জিন কমে যায় ব্যবসায়ীদের। এসব কারণে একাধিক দেশ থেকে আমদানি সত্ত্বেও দেশের বাজারে পণ্যটির দাম কমছে না।
অর্থসংবাদ/এমআই