ইস্পাত উৎপাদনকারী ভারতীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান পঞ্চম। রাজ্যটিতে উৎপাদিত ইস্পাতের প্রধান রফতানি বাজার বাংলাদেশ ও নেপাল। করােনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন সীমান্ত বন্ধ থাকায় ধাক্কা খেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ইস্পাত রফতানি। ভারতের বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে লোহা ও ইস্পাত রফতানি করে পশ্চিমবঙ্গের রফতানিকারকরা সব মিলিয়ে ৬৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার আয় করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কম।
২০১৯-২০ অর্থবছরের এপ্রিল-অক্টোবর সময়ে লোহা ও ইস্পাত রফতানি করে এ রাজ্য মোট ৭২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার আয় করেছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রফতানিমুখী এ শিল্পের আয় কমেছে ৩ কোটি ৩২ লাখ ডলার। ভারতে ১ এপ্রিল নতুন অর্থবছর শুরু হয়।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে রফতানি হওয়া লোহা, ইস্পাত ও ইস্পাতজাত পণ্যের অন্যতম রফতানি বাজার বাংলাদেশ ও নেপাল। এ দুই দেশে সড়কপথে স্পঞ্জ আয়রন ও বিলেট সবচেয়ে বেশি রফতানি করেন পশ্চিমবঙ্গের রফতানিকারকরা। করোনা মহামারীর মধ্যে এ দুই রফতানি বাজারে চীনা কোম্পানির সঙ্গে তুমুল প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছেন ভারতের এ রাজ্যের রফতানিকারকরা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে টিউব, পাইপ, স্ক্রু, বোল্টসহ বিভিন্ন ধরনের লোহা ও ইস্পাতজাত পণ্য রফতানি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বাজারেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসব পণ্য রফতানি হয়।
লকডাউনে ওড়িশার ১৯টি খনির মধ্যে সাকল্যে পাঁচটি থেকে আকরিক লোহা উত্তোলন করা সম্ভব হয়েছে। এর জের ধরে ২০২০-২১ অর্থবছরের এপ্রিল-সেপ্টেম্বর সময়ে ভারতে মাত্র ৪ কোটি ৭০ লাখ টন আকরিক লোহা উত্তোলন হয়েছে। একই সময়ে দেশটি থেকে ধাতুটির রফতানি ৬৩ শতাংশ বেড়ে ২ কোটি ২০ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উৎপাদন সীমিত হয়ে আসার বিপরীতে রফতানি খাতের চাঙ্গা ভাব ভারতের বাজারে আকরিক লোহার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে সংকটে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের রফতানিমুখী ইস্পাত শিল্প। এ পরিস্থিতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আকরিক লোহা রফতানি সাময়িক বন্ধ রাখতে আবেদন করেছেন বিশেষজ্ঞরা।