চা উৎপাদন ও বিপণনের জন্য সুপরিচিত দক্ষিণ ভারতের পাহাড়ি জেলা নীলগিরি। সিটিটিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০ জুন মৌসুমের ৫৩ তম নিলামে নীলগিরিতে প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম ওঠে ২০৮ দশমিক ৪৭ রুপিতে, ৫৭ বছরের মধ্যে এটাই চায়ের সর্বোচ্চ গড় দামের রেকর্ড।
এ বছরের প্রথম ১১ মাসে (জানুয়ারি-নভেম্বর) নীলগিরির চায়ের নিলাম থেকে সব মিলিয়ে ৭৭০ দশমিক ৮২ কোটি রুপি আয় হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিটিটিএ। ২০১৯ সালের প্রথম ১১ মাসে এখানকার নিলাম থেকে সব মিলিয়ে ৫০৪ দশমিক ২৮ কোটি রুপি আয় হয়েছিল। সেই হিসাবে নীলগিরির চায়ের নিলাম থেকে এক বছরের ব্যবধানে আয় বেড়েছে ২৬৬ দশমিক ৫৪ কোটি রুপি। ডিসেম্বরের শুরুর সপ্তাহে নীলগিরির চায়ের নিলাম থেকে ১০ দশমিক ৮৭ কোটি রুপি আয় হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১১৭ শতাংশ বেশি।
সিটিটিএর চেয়ারম্যান এল ভৈরব বলেন, কোভিড-১৯ শুরু থেকে মানুষ রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে। তাদের ধারণা ছিল, চা এতে খুবই কার্যকর। এ কারণে লকডাউনে দোকানপাট ও অফিস-আদালত বন্ধ থাকলেও চায়ের চাহিদায় খুব একটা প্রভাব পড়েনি। বরং এ সময় শ্রমিক সংকটে উৎপাদন সীমিত হয়ে আসায় বেড়েছে পানীয় পণ্যটির দাম। নীলগিরির নিলামে টানা ছয় মাস ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চা। চলতি বছরের শেষ দিকে এসে চায়ের দাম কমতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। বাস্তবে তা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, দেশে দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা ভারতীয় চা রফতানিতে দীর্ঘমেয়াদে শ্লথতা বয়ে আনার আশঙ্কা তৈরি করেছে। এ পরিস্থিতিও ভারতের বাজারে চায়ের দাম কমায়নি। বরং উৎপাদন সীমিত হয়ে আসার বিপরীতে অভ্যন্তরীণ বাজারে বাড়তি চাহিদা ভারতীয় চায়ের দাম চাঙ্গা রেখেছে। এদিকে চায়ের দাম বাড়তি থাকার জের ধরে চা পাতার ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে টি বোর্ড অব ইন্ডিয়া।
এর আগে, গত অক্টোবরে নীলগিরির ক্ষুদ্র ও মাঝারি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে চা পাতা সংগ্রহের জন্য ন্যূনতম মূল্য কেজিপ্রতি ৩০ দশমিক শূন্য ৩ রুপি বেঁধে দেয়া হয়। ভারতের ইতিহাসে এটাই চা পাতার ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যের সর্বোচ্চ রেকর্ড। ডিসেম্বরে নীলগিরিতে চা পাতার ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে কেজিপ্রতি ২৩ দশমিক ২৬ রুপি।