বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোলে ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ভারতে দুর্গাপূজা মানে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখা। প্রিয়জনদের সঙ্গে আড্ডা আর জমজমাট খাওয়া দাওয়া। ইলিশ ছাড়া বাঙালির খাওয়া-দাওয়া যেন পরিপূর্ণ হয় না। রেস্তোরাঁ হোক বা বাড়িতে অষ্টমী বা নবমীর দুপুরে সর্ষে ইলিশ, ইলিশ ভাপা বা ইলিশ পাতুরি, ইলিশ বিরিয়ানি দিয়ে লাঞ্চ না করলে পূজার আনন্দ অনেকটাই মাটি হয়ে যায়। স্বাদে গন্ধে পদ্মার ইলিশের জুড়ি মেলা ভার। এবার বাংলাদেশের ইলিশ আসার কারণে পূজায় ইলিশ রসনায় তৃপ্ত হবে বঙ্গ সমাজ এ কথা বলাই বাহুল্য।
পেট্রাপোল চেকপোস্টের আমদানিকারক রামকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, এখন থেকে প্রতিদিনই কিছু কিছু করে আসতে থাকবে বাংলাদেশের ইলিশ। অবশেষে ইলিশ যে এসে পৌঁছেছে এটাই আনন্দের। গতবারও ইলিশ পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। এবার কিছুটা দেরিতে হলেও বাঙালি এই মাছ পাবে। পূজার আগে এর থেকে বড় সুখবর আর কী বা হতে পারে। এজন্য শেখ হাসিনা সরকারকে অভিনন্দন জানাই।
ইলিশ আহরণ কমে যাওয়ায় সরকার ২০১২ সাল থেকে রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এতে করে ছয় বছর ধরে ইলিশ ছাড়ায় পূজা পার করে পশ্চিম বাংলার মানুষ। অবশেষে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আর দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ২০১৯ সাল থেকে পূজা উপলক্ষে আবারও নির্দিষ্ট পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি করে আসছে। এ বছর পূজায় ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গত তিনদিনে ১৭৩ মেট্রিক টন ৭০০ কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ৭৭ মেট্রিক টন ১০০ কেজি, শনিবার ৪০ মেট্রিক টন ১০০ কেজি এবং সোমবার ৫৬ মেট্রিক টন ৫০০ কেজি ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
বেনাপোল বাজারে ইলিশ কিনতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে সেলিম রেজা বলেন, এ বছর এখনো ইলিশ কিনতে পারিনি। ভেবেছিলাম সন্তানদের শখ মেটাতে ছোট একটা কিনবো, কিন্তু বাজারে এসে দেখি দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এতে আর ইলিশ কেনা হয়নি।
ইলিশ বিক্রেতা শহিদ জানান, ভারতে ইলিশ রপ্তানির কারণে সংকট বেড়েছে। বেশি দামে কেনায় বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ দুই হাজার টাকা ও ৫০০ গ্রাম সাইজের ইলিশের কেজি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেনাপোল মৎস্য অফিসের ফিশারিজ কোয়ারেন্টাইন অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার থেকে সরকারের বিশেষ অনুমতির ইলিশ রপ্তানি শুরু হয়েছে। গত তিন দিনে (বৃহস্পতিবার, শনিবার ও সোমবার) ১৭৩ মেট্রিক টন ৭০০ কেজি ইলিশ ভারতে গেছে। বাকি ইলিশ আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি শেষ করবে দেশের ৭৯টি ইলিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।
অর্থসংবাদ/এসএম